গর্ভাবস্থায় গ্যাসের সমস্যায় করণীয়: পেট ফাঁপা থেকে মুক্তির সহজ উপায়
গর্ভাবস্থা মানেই যেন একটা ম্যাজিকাল রোলার কোস্টার রাইড – একদিকে বাচ্চার আগমনের আনন্দ, অন্যদিকে শরীরের নানা ধরনের চমক! আর সেই চমকের মধ্যে অন্যতম হলো পেটে গ্যাস আর ফাঁপা ভাব। হরমোনের দৌরাত্ম্যে হজমশক্তি ধীর হয়ে যায়, বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে পেটে চাপ পড়ে – ফলে গ্যাস জমে পেটটা যেন বেলুনের মতো ফুলে ওঠে। কিন্তু চিন্তা নেই, এটা একদম স্বাভাবিক, আর রান্নাঘরের কয়েকটা জিনিস দিয়েই এর থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ওষুধের ঝামেলা ছাড়াই!
কেন হয় এই গ্যাসের ঝামেলা?
প্রোজেস্টেরন হরমোনটা যেন পেটের মধ্যে ব্রেক কষে দেয় – খাবার ধীরে হজম হয়, গ্যাস জমে। তার ওপর তেল-মসলাযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত খাওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য তো আছেই। ফলে পেট ফেঁপে ওঠা, বেলচিং, আর অস্বস্তি – যেন পেটের মধ্যে একটা ছোট্ট পার্টি চলছে!
গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস হলে করণীয় কী? ঘরোয়া টোটকা যা কাজে লাগবে
রান্নাঘরে যা আছে, তাই দিয়ে শুরু করা যাক। এগুলো সহজ, নিরাপদ আর দ্রুত কাজ করে:
-আদার জাদু: খাবারের পর পেট ফাঁপলে এক টুকরো তাজা আদা ছোট করে কেটে চুষে খান, বা আদা চা বানিয়ে নিন। আদা হজমশক্তি বাড়ায়, গ্যাস কমায় আর পেটকে শান্ত রাখে। গর্ভাবস্থায় আদা তো মর্নিং সিকনেসেরও বেস্ট ফ্রেন্ড!
-জোয়ানের ঝটপট সমাধান: এক চামচ জোয়ান (অজওয়াইন) মুখে নিয়ে টুক করে গিলে ফেলুন – গ্যাস যেন উড়ে যায়! তবে লবণ মিশিয়ে নয়, আর অল্প পরিমাণে। এটা হজমে সাহায্য করে দারুণ।
-মৌরির ম্যাজিক: জোয়ানের মতোই মৌরি (ফেনেল) চিবিয়ে খান এক চামচ। এতে থাকা উপাদান হজম বাড়ায় আর পেট ফাঁপা কমায়। মৌরি চা বানিয়েও খেতে পারেন – স্বাদও ভালো!
-পানির খেলা: অল্প অল্প করে বারবার পানি খান। এতে গ্যাস বেরিয়ে যায়, পেট নরম হয় আর ডিহাইড্রেশনও থাকে দূরে। দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি তো মাস্ট!
এছাড়া অল্প অল্প করে বারবার খান, তেল-ভাজা এড়িয়ে চলুন, আর হালকা হাঁটাহাঁটি করুন – পেটের গ্যাস যেন পালিয়ে যায়!
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
এই টোটকাগুলো ২-৩ ঘণ্টায় কাজ না করলে, ব্যথা বাড়লে, বমি হলে বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে আর দেরি করবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিন – নিজে থেকে ওষুধ খাবেন না।
গর্ভাবস্থায় এই ছোটখাটো অস্বস্তি তো আসবেই, কিন্তু সঠিক উপায়ে মোকাবিলা করলে আপনি আরামে থাকবেন। পেট ফাঁপা নিয়ে হাসতে হাসতে উপভোগ করুন এই সুন্দর সময়টা – শিগগিরই তো বাচ্চার হাসিতে সব ভুলে যাবেন!
গর্ভাবস্থায় কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুতই চিকিৎসকে শরণাপন্ন হওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন প্রকার ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।

