শরীরের তাপমাত্রা কত হলে জ্বর ধরা হয়? জেনে নিন মজার সত্যগুলো

Pathology Knowledge
0

শরীরের তাপমাত্রা কত হলে জ্বর ধরা হয়? জেনে নিন মজার সত্যগুলো


আহা, থার্মোমিটার হাতে নিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে মনে হচ্ছে, "এটা কি জ্বর, না শুধু গরম চায়ের প্রভাব?" এমন প্রশ্ন তো আমাদের সবার মনে ঘুরপাক খায়, বিশেষ করে শীতের দিনে বা অফিসের স্ট্রেসে। চিন্তা নেই, আজকের এই লেখায় আমরা ডুব দেব শরীরের তাপমাত্রার রহস্যে – কখন এটা স্বাভাবিক, কখন জ্বরের লক্ষণ, এবং মানুষের জ্বর সর্বোচ্চ কত ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। সবকিছু বলব মজার ছলে, যেন পড়তে পড়তে হাসি পায়, কিন্তু তথ্যগুলো থাকবে একদম খাঁটি। চলুন শুরু করি!


শরীরের তাপমাত্রা কত হলে জ্বর ধরা হয়? জেনে নিন মজার সত্যগুলো


স্বাভাবিক শরীরের তাপমাত্রা: ৯৮.৬ নাকি ওঠানামার খেলা?



আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি যে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এটা কোথা থেকে এল? ১৮৬৮ সালে জার্মান চিকিত্সক কার্ল রিইনহোল্ড অগাস্ট উন্ডারলিখ হাজার হাজার লোকের তাপমাত্রা মেপে এই গড় বের করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে এটা একটা গড় মাত্র – আসল স্বাভাবিক রেঞ্জ হলো ৯৭ থেকে ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে। একটু ওঠানামা? ওটা তো স্বাভাবিক! যেমন সকালে ঠান্ডা লাগলে তাপমাত্রা কম, আর রাতে বিছানায় গড়াগড়ি খেলে ১ ডিগ্রি পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ ক্লুগার বলেন, এই ছোট বাড়তি তাপমাত্রা আসলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় – যেন শরীর বলছে, "আরে, আমি তো ফাইট মোডে আছি!"


এখন ধরুন, আপনার থার্মোমিটার দেখাল ৯৯.৯ ডিগ্রি। জ্বর? না না, হয়তো আপনি শুধু একটা ভারী লাঞ্চ খেয়েছেন বা জিম থেকে ফিরেছেন। খাওয়া-দাওয়া, ব্যায়াম, এমনকি নারীদের ডিম্বস্ফোটনের সময় তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে যায়। আর ২০০১ সালের এক জাপানি গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রেস বা আবেগজনিত চাপেও এটা হতে পারে। তাই পরের বার বসের সাথে মিটিংয়ের পর তাপমাত্রা মাপলে অবাক হবেন না – হয়তো শরীর বলছে, "আমি তো গরম হয়ে গেলাম!"



শরীরের তাপমাত্রা কত হলে জ্বর ধরা হয়? সীমারেখা কোথায়?


এখন আসল প্রশ্ন: কতটা উঠলে বলব জ্বর? চিকিত্সকদের মতে, ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (বা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে এটাকে জ্বরের লক্ষণ ধরা হয়। এর নিচে? সাধারণত স্বাভাবিক বা সাময়িক ওঠানামা। কিন্তু মনে রাখবেন, এটা সবার জন্য এক নয়। বয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক তাপমাত্রা একটু কম থাকে, তাই তাদের ৯৯ ডিগ্রি হয়তো অ্যালার্ম বেল বাজাতে পারে। যেমন এক তরুণের জন্য ৯৯ ডিগ্রি মানে "আরাম করে চা খাও", কিন্তু বয়স্কের জন্য হতে পারে "ডাক্তারকে ফোন করো"।


যদি তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির ওপরে উঠে যায়? তাহলে তো কোনো মজা নেই – সোজা ডাক্তারের কাছে দৌড়ান। এটা হাই-গ্রেড ফিভার, যা গুরুতর ইনফেকশন বা অন্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।



মানুষের জ্বর সর্বোচ্চ কত ডিগ্রি হতে পারে? চরম সীমা কী?


এখন মজার অংশ: জ্বর কতটা উঠতে পারে? সাধারণত ফিভার ১০৬-১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে, কিন্তু মস্তিষ্কের অটোম্যাটিক সিস্টেম এরপর থামিয়ে দেয় – যেন শরীর বলছে, "বস, এবার থামো, না হলে সব পুড়ে যাবে!" তবে চরম ক্ষেত্রে, হাইপারথার্মিয়া (যা ফিভারের মতো নয়, কিন্তু অনুরূপ) ১১৫.৭ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠেছে এবং লোক সারভাইভ করেছে, যদিও এটা খুব রেয়ার। কিন্তু মনে রাখবেন, ১০৪ ডিগ্রির ওপরে গেলেই ডেঞ্জার জোন – মাথা ঘুরানো, পেশীতে সমস্যা, এমনকি অজ্ঞান হওয়ার ঝুঁকি। তাই জ্বরকে হালকা করে নেবেন না, কিন্তু প্যানিকও করবেন না!



জ্বর হলে কী করবেন? সাধারণ টিপস


- পর্যবেক্ষণ করুন: তাপমাত্রা নিয়মিত মাপুন। ১০০.৪-এর নিচে থাকলে বিশ্রাম নিন, পানি খান।

- ডাক্তার দেখান:১০৪+ হলে বা অন্য লক্ষণ (যেমন শ্বাসকষ্ট, বমি) থাকলে দেরি করবেন না।

- ওষুধ?প্যারাসিটামলের মতো ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ খেতে পারেন, কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া না।

- প্রতিরোধ:হাত ধোয়া, স্বাস্থ্যকর খাবার – এগুলো তো জানেনই!



শেষ কথা: শরীরের তাপমাত্রা একটা সিগন্যাল, যেন আপনার শরীরের অ্যাপ নোটিফিকেশন। সামান্য ওঠানামা নিয়ে চিন্তা না করে, কিন্তু সীমা ছাড়ালে অ্যাকশন নিন। যদি এখনও সন্দেহ হয়, ডাক্তারের সাথে কথা বলুন – তারা তো এইসবের এক্সপার্ট! এই লেখা পড়ে যদি হাসি পান আর তথ্য পান, তাহলে আমার লক্ষ্য সফল। সুস্থ থাকুন, হাসতে থাকুন!

Tags:

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)