কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয়
বর্তমানে বাংলাদেশে দিন দিন কিডনি রোগের সংখ্যা বাড়ছে।এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো অনিয়মিত জীবন যাপন ও ভেজাল খাবার গ্রহণ। তাই আমরা আজ কিডনি রোগের লক্ষণ কারণ ও কিডনি রোগ হলে করণীয় কি বা কিডনি রোগীরা কি কি খেতে পারবে কি কি খেতে পারবে না তাই সম্পর্কে জানব।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয়
কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগের সমস্যা দেখা যায় মূলত শরীরে রক্তে ক্রিটিনিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে। তবে কিডনিতে সমস্যা হলে প্রথম পর্যায়ে তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায় না কিন্তু কিডনির পয়েন্ট যখন ধীরে ধীরে বেড়ে যায় তখন শরীরে নানা ধরনের সমস্যা বা লক্ষণ দেখা দেয়। নিজে লক্ষণ গুলো দেয়া হলো।
১.হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া।
২.ক্ষুধা কমে যাওয়া ।
৩.শরীরে জ্বর জ্বর ভাব লাগা।
৪.শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে যাওয়া।
৫.শরীরের বিভিন্ন স্থান যেমন: হাত, পা, মুখে পানি জমা।
৬.প্রসাবের পরিমাণ কমে যাওয়া।
৭.প্রসাবের সাথে রক্ত যাওয়া।
৮.শরীর দুর্বল লাগা।
৯.প্রসাবের বেগ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে না পারা।
১০.অনেক সময় ঘুম কম খাওয়া।
১১.মাঝে মাঝে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানি দেখা দেওয়া বা মাথাব্যথা করা।
১২.পেট ফুলে যাওয়া বা পেট বা পিঠে ব্যথা হওয়া।
উপরোক্ত সমস্যা গুলি দেখা দিলে আপনি কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পরীক্ষা করার মাধ্যমে যে আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা তা দেখে নেওয়া উচিত।
কিডনি রোগের কারণ বা যাদের ঝুঁকি বেশি
যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত শরীরের রক্তে ক্রিটিনিনের পরিমাণ দেখা উচিত। কারণ উচ্চ রক্তচাপ এর কারণে কিডনির পয়েন্ট বেড়ে যায় বা কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডায়াবেটিস কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।শরীরে যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে কিডনি রোগে আক্রান্ত সম্ভাবনা থাকে।
শরীরে যদি ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় তাহলেও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার রোগী অনেকটা বেড়ে যায় তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
অনেক সময় অনিয়মিত জীবন যাপন বা ভেজাল খাবার গ্রহণের মাধ্যমেও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
কিডনি পয়েন্ট বেড়ে গেলে করণীয় বা প্রতিরোধের উপায়
কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে তার সঠিক চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।কিডনি ভালো রাখতে হলে অবশ্যই জীবন যাপনে বা খাদ্য খাবারে কিছুটা পরিবর্তন আনা উচিত। এছাড়াও যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস এর সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে আছে তাদের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।এছাড়া শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে কি কি খাওয়া উচিত
কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে খাদ্য খাবারে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা উচিত। তাছাড়া কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রায় সব ধরনের ফল বা শাকসবজি খেতে পারে। অনেক সময় কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে তার শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন যেসব সবজি বা ফলে পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় সেগুলো কম খাওয়ায় উচিত।
কিডনি পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়
মানুষের শরীরে ক্রিটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা 0.6-1.2 mg/dl । যদি ক্রিটিনিনের পরিমাণ 1.2 এর বেশি বা 5.0 এর কম থাকে তাহলে রোগীকে ওষুধের মাধ্যমে সুস্থ করা সম্ভব। আর যদি ক্রিটিনিনের পরিমাণ 5.0 এর বেশি হয় তাহলে ডায়ালাইসিস করতে হয়। এছাড়াও বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যদি প্রিটিলিনের পরিমাণ 2.0 এর বেশি হয় তাহলে ডায়ালাইসিস করতে হয়।
সর্বোপরি আমরা যদি কিডনি রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে পারি তাহলে আমরা সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে পারবো। তাছাড়া এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারব।