ক্রিয়েটিনিন টেস্ট খরচ
কিডনি আমাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। অধিকাংশ মানুষ এই কিডনি রোগে ভুগছেন।কিন্তু আমাদের ভিতরে অধিকাংশ লোকই জানেনা কিডনি রোগ সনাক্ত করতে কি টেস্ট করতে হয়। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন সিরাম ক্রিয়েটিনিন টেস্ট কি, ক্রিয়েটিনিন টেস্ট কি খালি পেটে করতে হয়, ক্রিয়েটিনিন টেস্ট খরচ, কিডনি রোগ নির্ণয় করার জন্য কি টেস্ট করা হয়,কিডনি ফাংশন টেস্ট কি, কিডনি ফাংশন টেস্টে কি কি টেস্ট করতে হয়, কিডনি রোগের লক্ষণ, কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব ক্রিয়েটিনিন টেস্ট খরচ
সিরাম ক্রিয়েটিনিন টেস্ট কি
সিরাম ক্রিয়েটিনিন হল রক্ত বা প্রস্রাবের এমন একটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে শরীরে কিডনির কার্যকারিতা বা কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা নির্ণয় করা।
ক্রিয়েটিনিন টেস্ট কি খালি পেটে করতে হয়
সিরাম ক্রিয়েটিনিন টেস্ট যেকোনো সময় করা যায় তবে ভালো ফলাফলের জন্য চিকিৎসক খালি পেটে এই টেস্ট করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।এছাড়াও ইউরিন ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করার জন্য চিকিৎসক রোগীকে সারাদিন বা ২৪ ঘন্টা প্রসাব ধরে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ক্রিয়েটিনিন টেস্ট খরচ
ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করার জন্য বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি হাসপাতালে ১৫০ -২০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে। এবং যে কোন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা বেসরকারি হাসপাতালে ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করার জন্য ৫০০ -৬০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
কিডনি রোগ নির্ণয় করার জন্য কি টেস্ট করা হয়
কিডনি ফাংশন টেস্ট এবং কিডনি আল্ট্রাসনো করানোর মাধ্যমে কিডনি রোগ নির্ণয় করা যায়।
কিডনি ফাংশন টেস্ট কি
রেনাল ফাংশন টেস্ট কে কিডনি টেস্ট বলা হয় । কিডনির কার্যকারিতা বা কিডনি রোগ নির্ণয় করার জন্য মূলত কিডনি ফাংশন টেস্ট করা হয়।
কিডনি ফাংশন টেস্টে কি কি টেস্ট করতে হয়
কিডনি ফাংশন টেস্টের ভিতরে ইউরিন ও ব্লাড এর কিছু টেস্ট করা হয়।
১.ইউরিন টেস্টঃ ইউরিন রুটিন এক্সামিনেশন টেস্ট (Urine R/M/E)
২.ব্লাড টেস্টঃ সিরাম ক্রিয়েটিনিন (Serum Creatinine), সিরাম টোটাল প্রোটিন(Serum Total Protein), সিরাম এলবুমিন গ্লোবিউলিন রেশিও(Serum Albumin Globulin Ratio) ব্লাড ইউরিয়া(Blood Urea), সিরাম ইলেকট্রোলাইট(Serum Electrolytes), সিরাম ইউরিক এসিড(Serum Uric Acid),ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স টেস্ট(Creatinine clearance test).
কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। নিচের লক্ষণগুলো দেওয়া হলঃ
১.ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
২.প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া করা।
৩.ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা কিন্তু প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়া।
৪.ঘন ঘন জ্বর হওয়া।
৫.প্রস্রাব ঘোলাটে বা দুর্গন্ধযুক্ত হওয়া।
৬.ঘন ঘন বমি হওয়া।
৭.হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া।
৮.তলপেট, পিঠে বা কোমরে ব্যথা হওয়া।
৯.ক্লান্তি বা দুর্বল লাগা।
১০.শরীরের যে কোন স্থান যেমন- হাত,পা ও মুখ ফুলে যাওয়া।
১১.শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলার্জির সমস্যা দেখা দেওয়া ।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলি আপনার কিডনি রোগের লক্ষণ হতে পারে তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায়
দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই সহজেই কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
১.ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
২.নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করতে হবে।
৩.ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৪.চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোন প্রকার ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫.প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
৬.নিয়মিত সবুজ শাকসবজি, ফলমূল ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে ।
৭.ধূমপান পরিহার করতে হবে।
৮.এবং প্রতি তিন মাস অন্তর রুটিন চেকআপ করতে হবে।
সর্বোপরি কিডনি আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ কিডনির মাধ্যমে আমাদের শরীরের সমস্ত বজ্র পদার্থ বাইরে নির্গত হয়।তাই আমাদের কিডনিকে সুস্থ রাখার জন্য সুস্থ স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে হবে এবং সুষম খাবার খেতে হবে।