টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর দাম কত
বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে অধিকাংশ মানুষেরই জ্বর হয়। কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে জ্বর হয়ে থাকে। সাধারণত এই জ্বরকে টাইফয়েড জ্বর হিসেবে ধরা হয়।
কিন্তু অধিকাংশ লোকই এই টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেনা। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন টাইফয়েড জ্বর কি, টাইফয়েড জ্বরের কারণ, টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ, টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়, টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত, টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়, টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে, টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম এবং টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর দাম কত সম্পর্কে।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর দাম কত
টাইফয়েড জ্বর কি
টাইফয়েড জ্বর একটি পানিবাহিত রোগ। শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের ফলে যে জ্বর হয় তাকে টাইফয়েড জ্বর বলা হয়।টাইফয়েড জ্বর হলে জ্বরের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় এবং তার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
টাইফয়েড জ্বরের কারণ
টাইফয়েড জ্বরের প্রধান কারণ হলো দূষিত পানি বা খাবার গ্রহণ করা যেহেতু টাইফয়েড জ্বর পানি বাহিত রোগ তাই পানির মাধ্যমেই বেশি মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এছাড়াও অপরিষ্কার পোশাক বা পরিবেশের কারণে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে।এছাড়াও যদি একবার টাইফয়েড জলে আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যাকটেরিয়া শরীরের ভিতরে থেকে যায় তাহলে পুনরায় টাইফয়েড জ্বরের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ
টাইফয়েড জ্বর হলে শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যার মাধ্যমে বোঝা যায় যে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। নিচে লক্ষণগুলো দেওয়া হলঃ
১.শরীরে সবসময় ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জ্বর থাকা।
২.জ্বরের সাথে প্রচন্ড মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথা হওয়া ।
৩.জ্বরের সাথে কাশি হওয়া।
৪. বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব হওয়া ।
৫.শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া।
৬.ক্ষুধা কমে যাওয়া।
৭.ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেওয়া।
৮.পেটে ব্যথা হওয়া।
৯.শরীরে অলসতা কাজ করা।
১০.চার থেকে পাঁচ দিন পর জ্বরের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়া।
১১.হার্ট বিট কমে যাওয়া।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলি দেখা দিলে টাইফয়েড জরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই দ্রুত চিকিৎসাকে শরণাপন্ন হতে হবে।
টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়
টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হলে ভালো হতে হলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসা কে শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ওষুধ বা ইনজেকশন নিতে হবে। এছাড়াও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধের উপায়
কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১.বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
২.শাকসবজি ও ফলমূল ভালো করে পানিতে ধুয়ে খেতে হবে।
৩.বাইরের খাবার বা পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪.যে কোন খাবার ভালোভাবে সেদ্ধ করে খেতে হবে।
৫.সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে।
৬.বাথরুম সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৭.কোন খাবার খাওয়ার আগে সব সময় হাত ভালোভাবে ধুয়ে খেতে হবে।
টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত
টাইফয়েড জ্বর হলে শরীর নিলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
১.টাইফয়েড জ্বর হলে শরীরে পানি শূন্যতার সমস্যা দেখা দেয় তাই এ সময় প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত।
এছাড়াও এ সময় ফলের শরবত, বিভিন্ন ধরনের সুপ, ডাবের পানি, পুদিনা পাতার শরবত, ঘোল খাওয়া যেতে পারে।
২.কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন -সেদ্ধ আলু, ভাত, ডিম, মাংস ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
৩.ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল বা কিসমিস খাওয়া যেতে পারে।
টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়
টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করা যাবে। তবে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে জ্বর কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এছাড়াও জ্বর কমানোর জন্য মাথায় জলপট্টি বা কুসুম গরম পানি দিয়ে গা হাত পা মুছে দিলে শরীরে জ্বর কমে যেতে পারে ।
টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে
মূলত টাইফয়েড জ্বর শরীরে ৩ -৬ দিন পরে ধরা পড়ে। আর এ জ্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ -৩ সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।
টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম
টাইফয়েড জ্বর হলে চিকিৎসাক প্রথম পর্যায়ে এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে থাকেন। তারপরও যদি জ্বর না কমে তাহলে টাইফিম ভি ইনজেকশন ও ভ্যাক্সফয়েড ইনজেকশন দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর দাম কত
টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর দাম সময়ভেদে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা হতে পারে।
সর্বোপরি টাইফয়েড জ্বর শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ অনেক সময় টাইফয়েড জ্বরের কারণে শরীরের যে কোন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সতর্ক এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বা বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।