মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়
আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোন থাকে।তার মধ্যে একটি হরমোন হচ্ছে প্রলাক্টিন হরমোন যেটা মহিলাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তাই আমাদের আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন প্রোল্যাকটিন হরমোন কি, প্রোল্যাকটিন হরমোন টেস্ট কেন করা হয়, প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ, মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়, প্রোল্যাকটিন হরমোন কমানোর খাবার, প্রোল্যাকটিন হরমোন নরমাল রেঞ্জ এবং প্রোল্যাকটিন হরমোন টেস্ট খরচ কত বাংলাদেশ সম্পর্কে।
আমরা আজ এই আর্টিকেল আলোচনা করব মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়
প্রোল্যাকটিন হরমোন কি
প্রোল্যাকটিন হরমোন হলো এমন একটি হরমোন যা শরীরের মস্তিষ্কের পিছনে অবস্থিত পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়। যা পরবর্তীতে মহিলাদের মহিলাদের স্তনে দুধ উৎপাদন কাজে সাহায্য করে।পুরুষের তুলনায় মহিলাদের শরীরের জন্য প্রোল্যাকটিন হরমোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রোল্যাকটিন হরমোন টেস্ট কেন করা হয়
বিভিন্ন কারণে চিকিৎসক প্রোল্যাকটিন হরমোন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
১.শরীরে হরমোনের ভারসাম্য পর্যবেক্ষণ করার জন্য চিকিৎসক প্রোল্যাকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
২.সন্তান ধারণের অক্ষমতা দেখা দিলে চিকিৎসকের প্রোল্যাকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
৩.অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসক প্রোল্যাকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
৪.গর্ভধারণ ব্যতীত অন্য সময় অস্বাভাবিকভাবে স্তন থেকে দুধ আসলে চিকিৎসক প্রোলেকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
৫.থাইরয়েডের সমস্যা বা পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে টিউমার দেখা দিলে চিকিৎসক প্রোল্যাকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
৬.বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় উন্নতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য চিকিৎসা প্রোল্যাকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
৭.যৌন চাহিদা কমে গেলে চিকিৎসক প্রোল্যাকটিন টেস্ট করার পরামর্শ দেন।
প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ
শরীরে প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। নিচে লক্ষণগুলো দেওয়া হলঃ
১.মহিলাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দেখা দেওয়া।
২.গর্ভাবস্থা ছাড়া মহিলাদের স্থানে অস্বাভাবিকভাবে স্তনে অস্বাভাবিকভাবে দুধ জাতীয় সাদাস্রাব যাওয়া।
৩.শরীরের যেকোনো জায়গায় অবাঞ্ছিত পশম বা ব্রণ হওয়া।
৪.পুরুষের পুরুষাঙ্গ শক্ত কম হওয়া।
৫.সহবাসের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া।
৬.মহিলাদের মত পুরুষের স্তন বড় হয়ে যাওয়া।
৭.পুরুষের স্তন বড় হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
৮.পুরুষা ও মহিলা উভয়ের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দেওয়া।
৯.পুরুষ ও মহিলা উভয়ের যৌন চাহিদা কমে যাওয়া।
১০.হরমোনে ভারসামহীনতা দেখা দেওয়া।
১১.মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়া বা হাড়ে ক্ষয় দেখা দেওয়া।
উপরোক্ত লক্ষণগুলি দেখা দিলে আপনার শরীরে প্রোল্যাকটিন হরমোন এর সমস্যা দেখা দেওয়া সম্ভাবনা থাকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়
১.মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দেখা দেয়।
২.মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দেয়।
৩.মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে গর্ভাবস্থা ব্যতীত স্তনে দুধের মত তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়।
৪.মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে শরীরে মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া বা হাড়ে ক্ষয় হওয়ার সমস্যা দেখা দেওয়া।
৫.মহিলাদের প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে সহবাসের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
প্রোল্যাকটিন হরমোন কমানোর খাবার
১.ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন ই যুক্ত খাবার শরীরে প্রোল্যাকটিন মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
২. ওমেগা ৩ যুক্ত সামুদ্রিক মাছ শরীরে প্রোল্যাকটিন এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৩.ফাইবার যুক্ত বা আঁশযুক্ত খাবার শরীরে প্রোল্যাকটিন মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৪.সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খেলে শরীরে প্রোল্যাকটিন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
প্রোল্যাকটিন হরমোন নরমাল রেঞ্জ
পুরুষ ও মহিলা ভেদে প্রোল্যাকটিন হরমোন এর নরমাল রেঞ্জ ভিন্ন। নিচে নরমাল রেঞ্জ দেওয়া হলোঃ
- Male (পুরুষ) : 02.10 – 17.70 ng/ml
Non -Pregnant(অ -গর্ভবতী ): 02.80 – 29.20 ng/ml
Pregnant (গর্ভবতী) : 09.70 – 208.50 ng/ml
Postmenopausal (পোস্টমেনোপজাল): 1.80 – 20.30 ng/ml.
প্রোল্যাকটিন হরমোন টেস্ট খরচ কত বাংলাদেশ
প্রোল্যাকটিন হরমোন টেস্ট করতে যেকোনো বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং হাসপাতালে ১৩০০ -১৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।
সর্বোপরি প্রোল্যাকটিন হরমোন আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এই প্রোল্যাকটিন হরমোন আমাদের প্রসব পরবর্তী সময়ে বুকে দুধ উৎপাদন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও প্রোল্যাকটিন হরমোন জনিত সমস্যার কারণে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের আজকে এই পোস্টটি পড়লে আপনারা প্রোল্যাকটিন হরমোন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।