নতুন গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত
বর্তমানে প্রত্যেকটি পরিবারেই রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে সবথেকে বেশি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করা হয়। তবে এর দাম ঊর্ধ্ব গতি থাকায় অনেকেরই বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন নতুন গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত, খালি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত, কোন কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার ভালো, গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ দেখার নিয়ম, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কেন হয়,এলপিজি গ্যাস কোন দেশের,গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব নতুন গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত
নতুন গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে যে দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি হয়েছে। সেই একই দামে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসেও বিক্রি করা হচ্ছে।নতুন গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। নিচে কয়েকটি কোম্পানির নাম ও ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম দেওয়া হলঃ
১.বসুন্ধরা ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৫৫০ - ১৬০০ টাকা
২.ওমেরা ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৪৫০ -১৫০০ টাকা
৩.এলপি ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৪০০ -১৪৫০ টাকা
৪.টোটাল গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৫৫০ - ১৬০০ টাকা
৫.বেক্সিমকো গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৪৫০-১৫০০ টাকা
৬. জি গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৪০০- ১৪৫০ টাকা
৭. যমুনা গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৫৫০ - ১৬০০ টাকা
৮. নাভানা গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৫০০-১৫৫০ টাকা
৯.পেট্রোম্যাক্স গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৫৫০ - ১৬০০ টাকা
১০.ওরিয়ন গ্যাস ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ১৫০০- ১৫৫০ টাকা
দোকান বা রেস্টুরেন্টে ৩০ কেজি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। ৩০ কেজি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারঃ ৩৬০০- ৩৬৫০টাকা।
খালি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কত
অনেকেই ভরা গ্যাস সিলিন্ডারের পাশাপাশি খালি গ্যাস সিলিন্ডার কিনে রাখেন। তবে অনেকেই এই খালি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম সম্পর্কে জানেন না। প্রতি ১২ কেজি খালি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা।
কোন কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার ভালো
প্রায় সব বাড়িতেই সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তবে অনেকেই জানেন না এর ভিতরে কোন গ্যাস কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার ভালো।বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যায় । প্রায় সব ধরনের কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার নিরাপদ। কিন্তু বর্তমান সময়ে বসুন্ধরা, ওমেরা, বেক্সিমকো বা টোটাল গ্যাসের চাহিদা সব থেকে বেশি। এছাড়াও বসুন্ধরা, টোটাল গ্রুপের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরক নিরোধক হওয়ায় দিন দিন এই দুটি গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। যদি গ্যাস সিলিন্ডার সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়, তাহলে সব কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারযোগ্য ও নিরাপদ ।
গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ দেখার নিয়ম
বর্তমানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে প্রায় মানুষ মারা যাচ্ছে। এই বিভিন্ন গ্যাস সিলিন্ডারের বিভিন্ন সমস্যা বা ত্রুটির কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটে।এই বিস্ফোরণ রোধ করতে গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ অনেক সময় গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। অনেকেই এই গ্যাস সিলিন্ডারের মেয়াদ কিভাবে দেখতে হয় জানেন না । তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমেই আপনারা গ্যাস সিলিন্ডার দেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন।
একটি সিলিন্ডার উৎপাদনের তারিখ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। সিলিন্ডারের গায়ে উৎপাদনের তারিখ খোদাই করে লেখা থাকে।মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ ও গ্যাস সিলিন্ডারে গায়ে খোদাই করে লেখা থাকে। অবশ্যই গ্যাস সিলিন্ডার কেনার আগে মেয়াদ দেখে কেনা উচিত।অনেক সময় গ্যাস সিলিন্ডারে গায়ে সি-২৪,সি-২৫ বা বি-২৫লেখা থাকে। এটা দেখে বুঝতে হবে গ্যাস সিলিন্ডারে মেয়াদ ২৪সাল বা ২৫ সাল পর্যন্ত আছে।
গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কেন হয়
গ্যাস সিলিন্ডারের বিভিন্ন ত্রুটি থাকার কারণে বিস্ফোরণ ঘটে।নিচে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হওয়ার কয়েকটি কারণ দেওয়া হলোঃ
১.গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ যদি লিক হয়ে গ্যাস বেরিয়ে যায়। তাহলে গ্যাস অন করার সাথে সাথে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
২.গ্যাস সিলিন্ডারে যেগুলো তার যদি সঠিকভাবে লাগানো না হয় তাহলে গ্যাস বেরিয়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে ।
৩.গ্যাস সিলিন্ডারের রাবার পাইপ ঢিলা হয়ে গেলে গ্যাস বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। এতে করে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
৪.গ্যাসের চুলা সঠিকভাবে বন্ধ না হলে গ্যাস বেরিয়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
৫.গ্যাসের চুলা বা গ্যাসের সিলিন্ডার বদ্ধ ঘরে রাখলে ঘরের ভিতরে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
৬.গ্যাস সিলিন্ডারের পাশে বা গ্যাসের চুলার পাশে দাহ্য জাতীয় পদার্থ থাকলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
উপরোক্ত কারণগুলোর কারণে বিস্ফোরণ ঘটে। তাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার আগে বিস্ফোরণ কিভাবে ঘটে সে সম্পর্কে জেনে সতর্কতা অবলম্বন করে গ্যাস ব্যবহার করা উচিত।
এলপিজি গ্যাস কোন দেশের
এলপিজি গ্যাস বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি পেট্রোলিয়াম কোম্পানি। এছাড়াও ওমেরা, বসুন্ধরা, বেক্সিমকো, জি গ্যাস বাংলাদেশের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। তবে এর মধ্যে টোটাল গ্যাস ফ্রান্সের একটি খনিজ তেল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। টোটাল গ্যাস বাংলাদেশ আমদানি করা হয়।
গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম
বর্তমানে প্রতিটি পরিবারেই সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তবে ভুল ব্যবহার করার কারণে বিস্ফোরণ ঘটে। তাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার আগে এর নিয়ম জেনে নেওয়া উচিত।
১.গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার আগে সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ দেখতে হবে।
২.গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটর,রাবার পাইপ, সেফটি ক্যাপ সঠিকভাবে লাগানো আছে কিনা সেটা দেখতে হবে।
৩.গ্যাস সিলিন্ডার উচু নিচু জায়গায় রাখা যাবে না। গ্যাস সিলিন্ডার সবসময় সমতল জায়গায় রাখতে হবে।
৪.গ্যাসের চুলা থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার দুই থেকে তিন ইঞ্চি নিচে রাখতে হবে।
৫.গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ দুই থেকে তিন ফিট লম্বা রাখতে হবে এবং গ্যাসের চুলা থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার দুই থেকে তিন ফিট দূরত্বে রাখতে হবে।
৬.গ্যাসের চুলা অফ করার সময় অবশ্যই চেক করতে হবে যে ঠিকভাবে অফ হয়েছে কি না।
৭.গ্যাসের সিলিন্ডার বদ্ধ ক্যাবিনেট এর মধ্যে রাখা যাবে না এবং গ্যাসের চুলা ও গ্যাস সিলিন্ডার খোলামেলা জায়গায় রাখতে হবে।
৮.গ্যাসের চুলা বা সিলিন্ডারের আশেপাশের দাহ্য জাতীয় পদার্থ ও রাখা যাবে না ।
উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ সহজেই এড়ানো যায়।
সর্বোপরি গ্যাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে রান্নার জন্য প্রত্যেকটা পরিবারে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। তাই নিয়ম কানুন মেনে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করা উচিত এবং দুর্ঘটনা এড়ানো উচিত।