প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করবে যেসব খাবার: শীতকালীন অস্বস্তি থেকে মুক্তির সহজ উপায়
শীতের দিনগুলোতে কম্বল মুড়িয়ে বসে থাকা যতটা আরামদায়ক, ততটাই ঝামেলার হয়ে দাঁড়ায় পানি পানের অনীহা। ফলে কী হয়? প্রস্রাবের ইনফেকশন, যাকে ডাক্তাররা বলেন ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউটিআই। এটা যেন এক অস্বস্তিকর অতিথি, যে আসে অঘোষিতভাবে আর যেতে চায় না সহজে! বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়, আর শীতকালে তো এর উৎপাত আরও বাড়ে। কিন্তু চিন্তা নেই, কারণ আপনার রান্নাঘরেই লুকিয়ে আছে কিছু সুপারহিরো খাবার, যা এই ব্যাকটেরিয়াল আক্রমণকে হাসতে হাসতে বিদায় করতে পারে। আজকের এই লেখায় আমরা জানবো, প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হয়, আর কীভাবে খাবারের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। চলুন, হাস্যরস মিশিয়ে শুরু করি এই যাত্রা!
কেন শীতকালে প্রস্রাবের ইনফেকশন বাড়ে?
শীতের ঠান্ডায় পানি খাওয়া যেন একটা যুদ্ধ। কম পানি পান করলে শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বের হতে পারে না, ফলে মূত্রনালীতে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে। এটা শুধু অস্বস্তি নয়, দীর্ঘদিন চললে কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু ভালো খবর হলো, ডাক্তারের ওষুধের পাশাপাশি কিছু খাবার খেয়ে আপনি এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আর ব্যাকটেরিয়াকে 'বাই বাই' বলে বিদায় করে। চলুন, দেখি কোন কোন খাবার আপনার প্লেটে আসতে পারে।
ক্রেনবেরি জুস: ব্যাকটেরিয়ার 'স্লিপারি স্লোপ'
আহা, ক্রেনবেরি! এই লালচে জাম-জাতীয় ফলটিকে দেখে মনে হয় যেন একটা ছোট্ট সুপারহিরো। ক্রেনবেরি জুস খেলে শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া স্লিপ হয়ে বেরিয়ে যায়, কারণ এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বেটা ক্যারোটিন আর লাইকোপেন থাকে। যেন বলছে, "ব্যাকটেরিয়া, তোমার জায়গা নেই এখানে!" গবেষণায় দেখা গেছে, এটা বিশেষ করে ইউটিআই-এর জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াকে আটকে দেয়। শীতকালে এক গ্লাস জুস খেয়ে নিন, অস্বস্তি দূর হবে আর স্বাদও পাবেন। তবে সুগার ফ্রি ভার্সন বেছে নিন, না হলে ওজনের চিন্তা যোগ হবে!
ব্রোকলি: ভিটামিন সি-র গ্রিন ওয়ারিয়র
ব্রোকলিকে অনেকে 'বিরক্তিকর সবজি' বলে এড়িয়ে যান, কিন্তু এটা তো প্রস্রাবের ইনফেকশনের বিরুদ্ধে একটা গ্রিন আর্মি! এতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে, যা প্রস্রাবকে অ্যাসিডিক করে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম বন্ধ করে। ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে আর ইনফেকশন দূর হয়। কল্পনা করুন, ব্রোকলি যেন বলছে, "আমি এখানে, ব্যাকটেরিয়া পালাও!" স্টিম করে খান বা স্যালাডে মিশিয়ে—শীতকালে এটা আপনার প্লেটের স্টার হতে পারে।
দারুচিনি: মসলার মধ্যে ম্যাজিক
দারুচিনি শুধু চায়ের স্বাদ বাড়ায় না, এটা তো শতাব্দী ধরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিরো! গবেষণায় দেখা গেছে, ইউটিআই-এর মূল অপরাধী ই. কোলি-কে এটা সহজেই দমিয়ে দেয়। চায়ে মিশিয়ে খান বা খাবারে ছড়িয়ে দিন—যেন একটা ছোট্ট মসলা-বোমা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে। হাস্যকর লাগতে পারে, কিন্তু এটা সত্যি কাজ করে। তবে অতিরিক্ত না, না হলে জিহ্বা জ্বলে যাবে!
পেঁপে: অ্যাসিডিটির সুইট সল্যুশন
পেঁপে খাওয়া যেন একটা মিষ্টি প্রতিশোধ—এতে ভিটামিন সি আর ক্যারোটিনয়েড প্রচুর, যা প্রস্রাবে অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে ব্যাকটেরিয়াকে জন্মাতে বাধা দেয়। গবেষণায় বলা হয়েছে, গাজর বা টমেটোর চেয়ে এতে তিনগুণ বেশি উপকারী উপাদান। কাঁচা বা পাকা যেভাবেই খান, এটা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বুস্ট করে। শীতকালে পেঁপে স্মুদি বানিয়ে নিন, অস্বস্তি দূর হবে আর পেটও খুশি!তবে প্রেগনেন্সি এর সময় প্রসাবে ইনফেকশন দেখা গেলে পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
রসুন: অ্যান্টিবায়োটিকের ন্যাচারাল ভার্সন
রসুনকে কেউ কেউ 'ভ্যাম্পায়ার রিপেলেন্ট' বলে, কিন্তু এটা তো ব্যাকটেরিয়ারও শত্রু! অ্যালিসিন নামক উপাদান এতে আছে, যা ই. কোলি-সহ অনেক ব্যাকটেরিয়াকে দমন করে। বারবার ফিরে আসা ইউটিআই-এর জন্য এটা দারুণ। কাঁচা রসুন চিবিয়ে খান (যদি সাহস থাকে!), বা খাবারে মিশিয়ে। হাস্যরসের খাতিরে বলি, এটা খেলে শুধু ব্যাকটেরিয়া নয়, কাছের লোকজনও দূরে থাকতে পারে—কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য তো মূল্য দিতে হয়!
প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে আরও কিছু টিপস: সতর্কতা যেন না হয় অবহেলা
খাবারের পাশাপাশি কিছু অভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন প্রচুর পানি খান—যেন শরীরের 'ফ্লাশ আউট' সিস্টেম চালু থাকে। ইনফেকশনের সময় চা-কফি বা অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন, না হলে মূত্রথলির অবস্থা আরও খারাপ হবে। ব্লুবেরির মতো অন্যান্য বেরি ফলও চেষ্টা করুন, এগুলো ক্রেনবেরির মতোই উপকারী। মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন, আর প্রোবায়োটিক-সমৃদ্ধ দই খান—যেন ভালো ব্যাকটেরিয়া শরীরে বাড়তে পারে। অ্যাসিডিক ফল যেমন লেবু বা কমলা কম খান, না হলে ইরিটেশন বাড়বে। আর যদি ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক দেন, পুরো কোর্স শেষ করুন—ভালো লাগলেও অর্ধেকে ছাড়বেন না!
শেষ কথা: স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি আপনার হাতে
প্রস্রাবের ইনফেকশন দূর করবে যেসব খাবার, তা তো জানলেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এগুলো প্রতিরোধের উপায়, গুরুতর সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শীতকালে এই ছোট্ট পরিবর্তনগুলো করে দেখুন, অস্বস্তি দূর হয়ে যাবে আর জীবন হবে আরও মজাদার। সুস্থ থাকুন, হাসুন আর খাবার উপভোগ করুন! যদি এই সমস্যা নিয়ে আরও জানতে চান, কমেন্টে বলুন।

.png)