ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
বর্তমানে বিশ্বে অধিকাংশ নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে।একটু অসাবধানতার কারণেই অধিকাংশ নারীরা এই ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে ।আমরা যদি জানতে পারে ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ ব্রেস্ট ক্যান্সার কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় বা ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে রোগী খাবার তালিকা তাহলে আমরা সহজেই ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব ব্রেস্ট ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি
সাধারণত আমাদের শরীরে কোষগুলো স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু কোন কারনে কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানের মত স্তন বা ব্রেস্টে টিউমার দেখা দেয়। পরবর্তীতে এই টিউমার গুলোই ব্রেস্ট ক্যান্সারে রূপ নেয়।
ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারের কারণ
১.কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মূলত ব্রেস্ট ক্যান্সারের মূল কারণ।
২.অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণেও ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে।
৩.নারীরা বেশি বয়স হওয়ার পরেও বিয়ে না হওয়ার ফলে যে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
৪.সন্তানকে নিয়মিত দুধ না খাওয়ানোর ফলেও ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে।
৫. অনেক ক্ষেত্রে নারীরা তিরিশ বছরের উপরের যে যাওয়ার পরে প্রথম সন্তানের মা হওয়া বা বয়স বাড়ার পরেও কোন সন্তান না নেওয়ার ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
৬.বংশগত কারণেও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৭.অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া বা কায়িক পরিশ্রম না করা।
৮.প্রতিদিন খাবারে শাকসবজির পরিমাণ কম রাখা বা অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার ফলেও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৯.অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া।
১০.স্তনের বা ব্রেস্টের সাইজ অনুযায়ী সঠিক সাইজের ব্রা না পড়া।
১১. সারাক্ষণ ব্রা পড়ে থাকার কারণেও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ
ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে ব্রেস্ট বা স্তনে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে নিচে লক্ষণগুলো দেওয়া হলো।
১.স্তন বা ব্রেস্টের বিভিন্ন জায়গায় টিউমার বা গুটি হওয়া।
২.অনেক সময় বগলে টিউমার বা চাকা হওয়া।
৩.স্তনের বা ব্রেস্টের আকার পরিবর্তন হওয়া।
৪.স্তন বা ব্রেস্ট ফুলে যাওয়া।
৫.স্তন বা ব্রেস্টে অতিরিক্ত ব্যথা হওয়া।
৬.স্তন বা ব্রেস্টের নিপিল বা স্তন বৃন্তে চুলকানি বা ব্যথা হওয়া ।
৭.স্তন বা ব্রেস্ট লাল হয়ে যাওয়া।
৮.স্তন বা ব্রেস্টের স্তন বৃন্ত থেকে স্রাব জাতীয় তরল পদার্থ বের হওয়া।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলি দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভবই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। কারণ ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়া সম্ভব।
ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা
কিছু কিছু খাবার ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে।
- ব্রকলি:এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রচুর পরিমাণে সালফোরোফেন আছে যা শরীরে ক্যান্সারের কমাতে সাহায্য করে।
- বাদাম জাতীয় খাবার:বাদাম বা দানাদার জাতীয় খাবার শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- সামুদ্রিক মাছ:পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সামুদ্রিক মাছ যা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ।
- রসুন: রসুনও শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- সবুজ শাক: সবুজ শাকসবজির মধ্যে পালং শাক যা শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে ।
- মাশরুম:মাশরুম শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি। খাবার মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যান্সার প্রতিষেধক উপাদান যা শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
- ডালিম:নিয়মিত ডালিম খাওয়ার মাধ্যমেও ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
- গ্রিন টি:প্রতিদিন খাবারের তালিকায় যদি গ্রিন টি রাখা যায় তাহলে সহজেই আমরা আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি।
ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়
ক্যান্সার মূলত শরীরে অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির ফলে সৃষ্টি হয় যাতে শরীরে অস্বাভাবিক কোষগুলি বৃদ্ধি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা।
- খাবারের তালিকায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি বা ফলমূল রাখতে হবে।
- শরীরে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি রোধ করতে হবে।
- বেশি বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে করে নিতে হবে।
- বিয়ের পর যত দ্রুত সম্ভব সন্তান নিতে হবে।
- সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত রাখা যাবে না ।
- শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করতে হবে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার বা অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
সর্বোপরি ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারলেই আমরা সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারব।অনেক সময় ব্রেস্ট ক্যান্সার আক্রান্তের ফলে মৃত্যু হতে পারে।তাই আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমেই ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ বা প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।