জরায়ুর টিকা দেওয়ার নিয়ম

Pathology Knowledge
0

জরায়ুর টিকা দেওয়ার নিয়ম


বর্তমান বাংলাদেশের জরায়ুর ক্যান্সারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মূলত বয়স বাড়ার সাথে সাথে অধিকাংশ নারী জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।আমরা যদি জানতে পারি জরায়ুর ক্যান্সার কি, জরায়ুর ক্যান্সারের কারণ, জরায়ুর ক্যান্সারের লক্ষণ বা জরায়ুর টিকা দেওয়ার নিয়ম বা জরায়ুর ক্যান্সারের টিকা কখন দিলে জরায়ুর  ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় তাহলে খুব সহজেই আমরা জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারব।






আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব জরায়ুর টিকা দেওয়ার নিয়ম


চলুন আগে আমরা জরায়ুর ক্যান্সার সম্পর্কে জেনে আসি।



জরায়ুর ক্যান্সার কি


জরায়ুর ক্যান্সার মূলত  সার্ভিকাল ক্যান্সার(Cervical cancer) বা জরায়ুর মুখের ক্যান্সার।জরায়ুর ভিতরে বা অভ্যন্তরীণ কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলেই জরায়ুর ক্যান্সার হয়ে থাকে।জরায়ুর ক্যান্সার মূলত ”হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাসের” মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে।



জরায়ুর ক্যান্সারের কারণ


জরায়ুর ক্যান্সার যেহেতু ভাইরাসের সংক্রমণে ছড়িয়ে থাকে সেহেতু খুব সহজেই যৌন মিলনের ফলে নারীদের শরীরে জরায়ুর ক্যান্সারটি ছড়িয়ে পড়ে।


১.একাধিক যৌন মিলনের ফলে জরায়ুর ক্যান্সার হতে পারে।


২.খুব অল্প বয়সে যৌন মিলনে জড়িয়ে পড়ার ফলেও জ্বরের ক্যান্সার হতে পারে।


৩.একাধিক বার গর্ভধারণ করলে।


৪.ভাইরাস আছে এমন কোন ব্যক্তি সাথে যৌন মিলন করলে।


৫.দীর্ঘদিন যাবত জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে ।


৬.প্রতিদিন খাবার তালিকায় সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল না রাখলে ।


৭.ধূমপানের অভ্যাস থাকলে।


৮.শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে।



জরায়ুর ক্যান্সারের লক্ষণ


জরায়ুর ক্যান্সার হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। নিচে লক্ষণ গুলো আলোচনা করা হলো। 






১.জরায়ুর নালীতে ব্যথা অনুভূত হওয়া।


২.সহবাসের সময় ব্যথা অনুগত হওয়া।


৩.সহবাসের পর রক্তপাত হওয়া।


৪.অতিরিক্ত স্রাব যাওয়া বা স্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া।


৫.ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।


৬.প্রস্রাবে ইনফেকশন হওয়া ।


৭.পেটে ব্যাথা হওয়া আবার পেট ফুলে যাওয়া।


৮.পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া।


৯.পিরিয়ডের সময় গন্ধযুক্ত রক্তপাত হওয়া ।


১০.ওজন কমে যাওয়া।


১১.খাবারের চাহিদা কমে যাওয়া।



ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে তাই লক্ষণগুলি দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং পরীক্ষা করে দেখা উচিত জরায়ুর ক্যান্সার হয়েছে কি না ।



জরায়ুর টিকা দেওয়ার নিয়ম



১০ বছর বয়সের পর থেকে ২৭ বছর বয়স পর্যন্ত জরায়ুর টিকা নেওয়া যায়। একমাত্র টিকার মাধ্যমেই সবথেকে বেশি জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। জরায়ুর ক্যান্সারের টিকা তিনটি ডোজের মাধ্যমে নেওয়া হয়।প্রথম ডোজটি নেওয়ার পর এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজটি  নেওয়া হয় এবং দ্বিতীয় ডোজের তিন মাস পর তৃতীয় ডোজটি নেওয়া হয়।২৭ বছর বয়সের পর জরায়ুর টিকা নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ  নেয়া উচিত।মূলত ৪৫ বছর বয়সের পর থেকে জরায়ুর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ।




জরায়ুর ক্যান্সার হলে করণীয়


১. ১০ বছরের পর জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধক টিকা নেওয়া ।

২.একের অধিক যৌন সঙ্গী না রাখা।

৩.একাধিকবার গর্ভধারণ না করা।

৪.ধূমপান পরিহার করা।

৫শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

৬.স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা ।

৭.অল্প বয়সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ না হওয়া।

৮.৩০ বছরের পর থেকে প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর ভায়া টেস্ট করা।


একমাত্র জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। তাই টিকা দেওয়ার মাধ্যমে জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।




জরায়ুর ক্যান্সার কি ভালো হয়



জরায়ুর ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয়। কিন্তু অধিকাংশ জরায়ুর  ক্যান্সার শেষ পর্যায়ে যে ধরা পড়ে যার কারণে অর্ধেকের বেশি রোগী মৃত্যুবরণ করেন।




সর্বোপরি প্রতিবছর  অধিকাংশ নারী জরায়ুর ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করছে। তাই এই জরায়ুর ক্যান্সার সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে পারলে এই জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারব।



Tags:

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)