জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনের মধ্যে দিতে হয়
বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের সমস্যা দেখা দেয়। এর অন্যতম কারণ হলো সঠিক সময়ে জলাতঙ্ক রোগের টিকা না নেওয়া।কিন্তু অনেকেই এই জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে জানেনা। তাই আমরা আজ এই পোষ্টের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে কিছু তথ্য জানব।আমরা এই পোস্টে জলাতঙ্ক রোগ কি, জলাতঙ্ক রোগ কিভাবে ছড়ায়, জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ এবং জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনে মধ্যে দিতে হয় সেই সম্পর্কে জানবো।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনের মধ্যে দিতে হয়
জলাতঙ্ক রোগ কি
জলাতঙ্ক রোগ মূলত র্যাবিস ভাইরাস(Rabies virus) নামক এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণ থেকে হয়ে থাকে।রাবিস ভাইরাস এক ধরনের নিউরোট্রপিক ভাইরাস। যার মাধ্যমে প্রাণীদেহের শরীরে জলাতঙ্ক রোগের সৃষ্টি হয়।
জলাতঙ্ক রোগ কিভাবে ছড়ায়
সংক্রমিত পশু বা মানুষের মাধ্যমে অন্য পশু বা মানুষের কামড় বা আঁচড়ের ফলে ছড়িয়ে পড়ে।সংক্রমিত পশুর নালা থেকে ছড়ায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কুকুর ও বিড়ালের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে থাকে। খুব কম মানুষের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে থাকে।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ
জলাতঙ্ক রোগের প্রধান লক্ষণ হল পানি দেখলে আতঙ্কিত হয়ে পড়া। এছাড়াও কিছু কিছু লক্ষণ নিম্মে দেওয়া হল।
১.জ্বর জ্বর ভাব হওয়া।
২.ক্ষুধা কমে যাওয়া।
৩.কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হওয়া।
৪.মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া।
৫.পানি পিপাসা পাওয়ার পরেও পানি দেখলে আতঙ্কিত হওয়া।
৬.খিঁচুনি হওয়া।
৭.আক্রান্ত স্থান অবশ হয়ে যাওয়া।
৮.হঠাৎ মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া।
৯.শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেওয়া।
১০.অনেক সময় মুখ থেকে নালা বের হওয়া।
১১.ক্ষতস্থানে ব্যথা বা চুলকানি হওয়া।
১২.সব বিষয় নিয়ে কনফিউশন বা অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা খাওয়া।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ দেখা দিলে বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। তাই লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং সঠিক সময়ে টিকা নেওয়া উচিত।
জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনের মধ্যে দিতে হয়
সংক্রমিত পশু বা প্রাণীর কামড় বা আঁচড় দিলে ২৪ ঘন্টার ভিতরে টিকা দেওয়া উচিত।জলাতঙ্ক রোগের জন্য পাঁচটি টিকা দেওয়া হয়। যেমন: শূন্যতম দিনে, তৃতীয় তম দিনে, সপ্তম তম দিনে, ১৪ তম দিনে, এবং তারপর 28 তম দিনে, এই পাঁচটি টিকা দিতে হয়। তবে ১৪ তম ও 28 তম দিনের টিকা না দিলেও হয়। কিন্তু শূন্যতম দিনে, তৃতীয়তম দিনে এবং সপ্তম তম দিনে টিকা অবশ্যই দিতে হবে।
জলাতঙ্ক রোগের টিকার মেয়াদ
জলাতঙ্ক রোগের টিকা যদি আপনি তিনটি ডোজ দিয়ে থাকেন। তাহলে আপনি তো জলাতঙ্ক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। তবে বুস্টার ডোজ দেওয়া ভালো।
জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার
জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় হল টিকা নেওয়া। কারণ ব্যতীত অন্য কোন চিকিৎসা নেই। সঠিক সময়ে টিকা নেওয়ার মাধ্যমে আমরা জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি।
সর্বোপরি জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ দেখা দিলে বাচার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাই অবশ্যই আমরা বিড়াল বা অন্যান্য গবাদি পশু কামড় বা আচড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে জলাতঙ্ক রোগের টিকা নেওয়া উচিত।প্রতি বছর জলাতঙ্ক রোগের মারা যাওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি । তাই আমাদের জনতংকর রোগ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।